দুটি থানা ও ৬টি ফাঁড়ির প্রস্তাব

শুকলাল দাশ :

নবনির্মিত রেলপথের মাধ্যমে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সাথে সারা দেশের ট্রেন যোগাযোগ স্থাপিত হওয়ার পর এই রুটের নিরাপত্তা এবং মাদক পাচার রোধে রেলওয়ে পুলিশের ওপর বাড়তি চাপে পড়েছে। তবে আগের নির্ধারিত জনবল নিয়ে নতুন রুটের নিরাপত্তা ও মাদক পাচার রোধে কাজ করে যাচ্ছে রেলওয়ে পুলিশ। মাদকের ক্ষেত্রে দেশের সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর এলাকা কক্সবাজার। নতুন রেললাইন হওয়ার পর পর্যটন নগরীর সাথে সারা দেশের ট্রেন যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। আগে সড়ক ও নৌ পথে মিয়ানমার থেকে টেকনাফ–কক্সবাজার হয়ে সারা দেশে ইয়াবা পাচার হতো।

এখন ট্রেন যোগাযোগ স্থাপিত হওয়ার পর এই রুট দিয়ে মাদক পাচার বিস্তারের আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ। সেই আশঙ্কার বিষয়টি বিবেচনা করে এবং ট্রেন যাত্রীসহ নবনির্মিত রেললাইন ও কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনের নিরাপত্তার জন্য ২টি রেলওয়ে থানা (দোহাজারী ও কক্সবাজার) ও ৬টি রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি এবং কক্সবাজার স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় কক্সবাজার রেলওয়ে পুলিশের সার্কেল অফিস স্থাপনের জন্য পুলিশ সদর দপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। জনবলসহ এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠিয়েছে চট্টগ্রাম রেলওয়ে জেলা পুলিশ।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, কক্সবাজার নতুন রেললাইনের নিরাপত্তা, যাত্রীদের নিরাপত্তায় আমরা আন্তরিকতার সাথে কাজ করছি। আমাদের যে জনবল আছে তা দিয়ে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছি। মাদকের ব্যাপারেও আমাদের সাঁড়াশি অভিযান চলছে। চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ রোধে আমরা প্রতিনিয়ত এই রুটের প্রতিটি স্টেশনসহ আশপাশের এলাকার মানুষদের সচেতন করছি। আগের থেকে একেবারেই কমে এসেছে। এখন আর আগের মতো পাথর নিক্ষেপের কোনো ঘটনা ঘটছে না। পুলিশের পাশাপাশি প্রতিটি ট্রেনে আমাদের নিজস্ব গোয়েন্দাও রয়েছে।

রেললাইনে এবং যাত্রীদের নিরাপত্তায় কোনো ধরনের কমতি নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, কক্সবাজার রুটের জন্য আমরা দুটি থানা, ৬টি পুলিশ ফাঁড়ি ও কক্সবাজারে একটি সার্কেল অফিসের জন্য পুলিশ সদর দপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এসব থানা ও ফাঁড়ির জন্য ২২৭ জন জনবল চাওয়া হয়েছে। তবে এখনো অনুমোদন পাওয়া যায়নি।

প্রস্তাব অনুযায়ী, দুটি থানার একটি কক্সবাজার ও অপরটি দোহাজারী। আর ৬টি ফাঁড়ি হবে পটিয়া, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা ও রামুতে। পটিয়া ও সাতকানিয়া ফাঁড়ি থাকবে দোহাজারী রেলওয়ে থানার অধীনে, বাকি চারটি ফাঁড়ি থাকবে কক্সবাজারের অধীনে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০১ কিলোমিটার নবনির্মিত রেলপথ ও আইকনিক স্টেশন বিল্ডিংয়ের উদ্বোধন করেন। ১ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা–চট্টগ্রাম কক্সবাজার রুটে কক্সবাজার এক্সপ্রেস নামে এক জোড়া বিরতিহীন ট্রেন চালু হয়। ট্রেন চলাচল শুরুর পর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ১০ জানুয়ারি থেকে পর্যটক এক্সপ্রেস নামে আরও এক জোড়া ট্রেন চলাচল শুরু হয়।